তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ ও তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ-এর মাঝে পার্থক্য কী? || তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ ও তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ কী?

তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ ও তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ-এর মাঝে পার্থক্য কী?


তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ (Electromagnet Radiation) কি?

তড়িৎ ও চৌম্বকক্ষেত্রের মিথস্ক্রিয়ায় যে রশ্মি উৎপন্ন হয় তার বিকিরণ

অদৃশ্য বা দৃশ্যমান আলোককে বিকিরণ (Radiation ) বলে। এই রেডিয়েশনের সাথে পরস্পর লম্বভাবে বিন্যস্ত তড়িৎও চৌম্বক ক্ষেত্র বিদ্যমান, তাই একে তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ (Electromagnet Radiation) বলে।

পদার্থবিদ্যায়, তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণটি তড়িৎ চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের তরঙ্গগুলিকে বোঝায়, স্থানের মাধ্যমে প্রচার করে, বৈদ্যুতিন চৌম্বকীয় আলোকসজ্জা শক্তি বহন করে।  এটিতে রেডিও তরঙ্গ, মাইক্রোওয়েভ, ইনফ্রারেড, হালকা, অতিবেগুনী, এক্স-রে এবং গামা রশ্মি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।  এই সমস্ত তরঙ্গ বৈদ্যুতিন চৌম্বকীয় বর্ণালীটির অংশ গঠন করে।

বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ (Electromagnetic radiation) হলো- এক প্রকার তরঙ্গধর্মী শক্তি। সংক্ষেপে একে বলা হয়- E-M radiation বা EMR। মূলত যখন কোনো বিদ্যুৎ আধান স্পন্দিত হলে বা ত্বরণগতি লাভ করলে, ওই আধান থেকে একটি বিদ্যুৎশক্তিযুক্ত এবং চৌম্বক ক্ষেত্রবিশিষ্ট একটি তরঙ্গ উৎপন্ন হয় এবং তা বাইরে দিকে ধাবিত হয়। এই তরঙ্গকে বলা হয়  বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ।


তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ ও তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ-এর মাঝে পার্থক্য কী?

তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ (Electromagnet Radiation)


তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গকে স্বচালিত অনুপ্রস্থ তরঙ্গরূপে কল্পনা করা যায়, যার পরস্পরের সাথে লম্বভাবে অবস্থানকারী একটি তড়িৎ ও একটি চৌম্বকীয় অংশ আছে। এই চিত্রে লম্ব তলে তড়িৎ ক্ষেত্র ও আনুভূমিক তলে চৌম্বকীয় ক্ষেত্র দেখানো হয়েছে


তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ কি : 

কোন তড়িৎক্ষেত্রে চুম্বক বলরেখার মধ্যে ইলেক্ট্রন আধানের দ্রুত পর্যাবৃত্ত আন্দোলন বা হ্রাসবৃদ্ধি ঘটলে ইলেক্ট্রনগুলাে অতিরিক্ত শক্তি অর্জন করে বলরেখার সমান্তরালে শক্তি বিকিরন যা তরঙ্গাকারে চারদিকে দ্রুতবেগে ছড়িয়ে পড়ে । একে তাড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ বলে ।

শূন্যমাধ্যমে আলোর সঞ্চলন গতি বা দ্রুতিতে গতিশীল বিদ্যুৎ ও চুম্বকশক্তি আলোড়িত হয়। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ এবং চৌম্বকক্ষেত্র পরস্পর লম্ব দশায় থাকে এবং উভয় তরঙ্গ সঞ্চালন অভিমুখে সাথে লম্ব অবস্থায় থাকে। এই উভয় তরঙ্গের একীভূত দশাকে বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ নামে অভিহিত করা হয়।

মূলত কোনো পরিবাহকের চৌম্বকক্ষেত্রের উপস্থিতিতে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। এর ফলে বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় আবেশের সৃষ্টি হয়। ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে এই ঘটনার প্রথম ব্যাখ্যা দেন মাইকেল ফ্যারাডে। ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দে জেমস ক্লার্ক এবং ম্যাক্সওয়েল বিদ্যুৎ ও চুম্বকের সরল ও প্রতিসম সংজ্ঞা উপস্থাপন করেন।

ম্যাক্সওয়েল তত্ত্ব অনুসারে, বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ হলো এক প্রকার অনুপ্রস্থ তরঙ্গ। কারণ এর তরঙ্গ মাধ্যমের কণাগুলোর কম্পনের দিকের সাথে সমকোণে অগ্রসর হয়। এই সূত্র থেকে উদ্ভব হয় বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ তত্ত্ব। এর চলমান রূপ নিচের চিত্রের মতো।

তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ ও তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ-এর মাঝে পার্থক্য কী?

তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ


তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের শূন্য মাধ্যমে সঞ্চালন ক্ষেত্রে তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের গতিবেগ ও আলোর গতিবেগের সমান। অর্থাৎ v=c0 


আর ও পড়তে পারেন...

Comments

Popular posts from this blog

ঘনবস্তুর সংজ্ঞা || ঘনবস্তু কাকে বলে? || ঘনবস্তু কত প্রকার ও কি কি? || ঘনবস্তুর মাত্রা কয়টি ও কি কি

রাশি কাকে বলে? || রাশি কতো প্রকার ও কি কি?

 ভার্নিয়ার স্কেল কী? || ভার্নিয়ার ধ্রুবক কাকে বলে?